বিএনপি-জামায়াতের ডাকা হরতালের পর লাগাতার অবরোধে নৈরাজ্য ও নাশকতা সৃষ্টির অভিযোগ এনে শান্তিগঞ্জ উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে প্রথম মামলা করে শান্তিগঞ্জ থানা পুলিশ। এ মামলায় ৪৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। অজ্ঞাতনামা আসামি রাখা হয় আরও ৩০ থেকে ৪০ জন।
গ্রেপ্তার দেখানো হয় ৬ জনকে। ৩১ অক্টোবর প্রথম দফা অবরোধের শেষ দিন সকালে পাগলা বাজারে পিক-আপের ভ্যান ভাঙচুরের অভিযোগে দ্বিতীয় মামলা করে পুলিশ। এ মামলায় ৩১জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়।
অজ্ঞাত রাখা হয় আরও ৩০ থেকে ৪০ জনকে। পুলিশের করা এই দুই মামলায় উপজেলার প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নের বিএনপির নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়। নামোল্লেখ ও অজ্ঞাতনামাসহ দুই মামলায় ১৬০ জন নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়।
নৈরাজ্য আর নাশকতা সৃষ্টির মামলায় ও ঢাকায় পুলিশ হত্যামামলায় কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি ও সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আনছার উদ্দিনকে ৪ নভেম্বর সিলেট থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৯ এর একটি দল। পরে তাকে শান্তিগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তরের পর জেল হাজতে পাঠানো হয়।
২ নভেম্বর পাগলা বাজারে গাড়ি ভাংচুরের মামলায় শান্তিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফারুক আহমদকেও আসামি করা হয়। দুই মামলায় উপজেলা বিএনপির সকল সিনিয়র নেতাসহ দেড় শতাধিক কর্মীদেরও আসামি করা হয়েছে। তাদের ধরতে বাড়ি বাড়ি ক্রমাগত অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ প্রশাসন। শুধু নেতাকর্মীই নয়, বিএনপি সমর্থন করেন এমন সমর্থকেরাও ঘড়বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন।
বিএনপির একাধিক নেতাকর্মী ও সমর্থকেরা অভিযোগ করে বলেন, একটি স্বাধীন দেশে পুলিশ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য কাজ না করে তারা সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করছে। মানুষের জানমালের নিরাপত্তার পরিবর্তে ক্ষমতাসীন দলের হয়ে নিরপরাধ মানুষের উপর হামলা মামলা করছে।
সরকার দেশের গণতন্ত্র হরণের পায়তারা করছে বলেও অভিযোগ করেন নেতারা। তারা বলেন, বিএনপির শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে সরকারই তার নিজস্ব লোক দিয়ে জ্বালাও পোড়াও করেছে। এখন সব দায় ছাপাচ্ছে বিএনপির উপর। তাদের উপর করা সকল মামলা সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে দাবি করেন জাতীয়তাবাদে আদর্শে আদর্শিক এসব নেতারা।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ বলেন, কোনো ভাবেই পুলিশ বিএনপির নেতাকর্মীর উপর ন্যায় আচরণ করছেন না। তবে আমরা বিশ্বাস করি পুলিশ এটা সরকারের ছাপে করছেন। শান্তিগঞ্জে আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি। কোনো নৈরাজ্য হয়নি।
মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে আমি এবং আমার দলের নেতাকর্মীদের উপর। উপরের নির্দেশেই পুলিশ এমন আচরণ করছেন বলে আমি মনে করি। আমার নেতাকর্মীদের উপর যে মামলা দেয়া হয়েছে তা তুলে নেয়ার দাবি করছি। পাশাপাশি আনছার উদ্দিনসহ আমাদের যত নেতাকর্মীকে কারাবন্দি করা হয়েছে তাদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।
শান্তিগঞ্জ থানার ওসি মো. খালেদ চৌধুরী বলেন, শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করছি। দুটি মামলায় এ পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠিয়েছি। বাকীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে। নিরপরাধ কাউকেই আমরা হয়রানি করছি না।
টিএইচ